
সারওয়ার মাহমুদ, চবি প্রতিনিধি
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস থেকে শহরে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম শাটল।কিন্তু পর্যাপ্ত নিজস্ব বাস থাকলেও নেই ক্যাম্পাসের ভিতরে চক্রাকারে বাস সার্ভিস। একসময় তা থাকলেও সিন্ডিকেট ও জীব বৈচিত্র্য রক্ষার অযুহাতে ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে ছাত্র বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে করে ছাত্র ছাত্রীদের এত বিশাল ক্যাম্পাসে চলাচল অত্যন্ত ব্যয়বহুল, সময় সাপেক্ষে ও দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। সিএনজি ড্রাইভার ও রিকশা চালকদের অতিরিক্ত ভাড়া আদায় কে কেন্দ্র করে হাতাহাতি মারামারি এখন নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাড়িয়েছে।চক্রাকারে বাস চালু করা নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত আন্দোলন করছে শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী নওশীন তারান্নুম অনন্যা বলেন-আমাদের ২১০০ একরের বিশাল ক্যাম্পাসে চলাচল করা খুব কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে।ছাত্র বাস গুলো চালু হলে সল্প সময়ে আমরা ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে চলাচল করতে পারতাম। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী সাদমান সাকিব অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের ব্যাপারটি সামনে এনে বলেন- আমরা সবাই ছাত্র, আমাদের পরিবার থেকে সীমিত অর্থ এনে পড়াশোনা করতে হয়। ক্যাম্পাসের ভিতরে সিএনজি ও রিকশার অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের মাধ্যেমে আর্থিক একটা প্রভাব আমাদের মাঝে পড়ছে।
লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী নাহিদ প্রধান স্থানীয় ড্রাইভারদের সাথে ছাত্রদের প্রায় সময়ে ঘটে যাওয়া মারামারি,কথা কাটাকাটির কারন হিসেবে ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে অতিরিক্ত ভাড়া আদয় এবং বাস চলাচল বন্ধ থাকা কে দায়ী করেন।একই বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী নিরমা বর্মন বলেন- প্রশাসন কর্তৃক নির্ধারিত ভাড়া থাকলেও অতিরিক্ত আদায় করা হয়। তাছাড়া হল থেকে ফ্যাকাল্টি গুলো খানিকটা দূরে হওয়ায় অনেক সময় টাইমলি ক্লাস বা পরীক্ষায় এটেন্ড করতে পারি না।
দর্শন বিভাগের ছাত্রী সুরভিত শাম্মী বলেন- অনেক দিন ধরেই আমরা মানববন্ধন সহ অনেক আন্দোলন করছি প্রশাসনের আশ্বাস থাকলেও বাস চলাচল নিয়ে কোনো অগ্রগতি নেই।চবি ক্যাম্পাসে শিক্ষক বাসের পাশাপাশি ছাত্র ছাত্রী দের জন্য বাস চালু করা অতীব জরুরি হয়ে পড়েছে।বাস থাকলে আমাদের ক্যাম্পাসে চলাচল করতে অনেক সুবিধা হতো।
আগে চবি ক্যাম্পাসের ভিতরে চক্রাকারে ছাত্র বাস চালু ছিল।জিরো পয়েন্ট থেকে এক নম্বর গেট প্রতি আধাঘন্টায় একবার করে আপডাউন করতো।সোহরাওয়ার্দী মোড় থেকে ছেড়ে আইন অনুষদ হয়ে চক্রাকারে আবার সোহরাওয়ার্দী মোড়ে ফিরতো। ২০ মিনিট পর পর গাড়ি গুলো একবার ঘুরে আসতো।কিন্তু সবুজ ক্যাম্পাসে বিচরন করা অসংখ্য প্রানীর অস্তিত্ব রক্ষা,বাজেট কমানো এবং স্থানীয় সিন্ডিকেটের জন্য বন্ধ হয়ে পড়ে।
গত এপ্রিলে ক্যাম্পাসে ছাত্র বাস চালুর দাবিতে আন্দোলন হলে এই ব্যাপারে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ড. শহীদুল ইসলাম বলেছিলেন- ক্যাম্পাসে এক সময় বাস চলতো।গত ২৫ বছর আগে খরচ কমানো এবং ক্যাম্পাসের জীব বৈচিত্র্য রক্ষায় যানবহন চলাচল(ইঞ্জিন চলিত বাহন) সীমিত করা হয়।তখন ছাত্র বাস গুলো বন্ধ হয়ে যায়। তবে শিক্ষার্থীরা চাইলে আমরা ইউজিসি কে আবারো বাস চালু করার বিষয়ে জানাবো।
আশ্বাসের অনেকদিন পরেও তেমন কোনো আশার আলো দেখা যাচ্ছে না বরং অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের প্রতিবাদ করলে দিনের পর দিন ক্যাম্পাসে সিএনজি ড্রাইভার, রিকশাওয়ালা কতৃর্ক মার খেয়ে যাচ্ছে চবি শিক্ষার্থীরা।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক বাসের পাশাপাশি ছাত্র-ছাত্রীদের ২১০০ একরে চলাচলের জন্য বাস গুলো পুণরায় চালু করা এখন সময়ের দাবি।
Newsofdhaka24.com / নিজস্ব প্রতিবেদক
আপনার মতামত লিখুন: