শরিফুল ইসলাম,
বর্তমান সময়ে মুদ্রাস্ফীতি ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির ফলে দেশের সাধারণ জনগণ বিপাকে ধার-কর্জ করেও সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
জীবনের ঘটনা- ১: জসিম মন্ডল (৫৫) নামের এক ব্যক্তি বাস করেন রাজধানীর রামপুরা এলাকায়। পেশায় একজন রিকশাচালক। ৫ সদস্যের পরিবার। একটি ছোট বাসায় ভাড়া থাকেন। বড় ছেলে স্কুলে পড়ালেখা করেন। কিন্তু একাধারে দীর্ঘদিন বাসা ভাড়া দিতে পারছেন না। ছেলের স্কুল খুলে ও ইউনিফর্ম এর অভাবে পাঠাতে পারছেন না স্কুলে। এদিকে বাসা ভাড়া না দিতে পারায় বাড়ির মালিক তো বলবেই। অন্যদিকে মাস তিনেক আগে একটি এনজিও থেকে ঋণ নিয়েছিলেন ১০,০০০ টাকা। সাপ্তাহিক কিস্তি পরিশোধ করার পরে পরিবারের সকলের জন্য খাবার রোজগার করা খুবই কঠিন। বাসা ভাড়া বিদ্যুৎ বিল পানির বিল গ্যাস বিল বাড়ানোর কথা জানতে পেরে তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ঋণ পরিশোধ হলেই গ্রামের বাড়িতে চলে যাবেন।
জীবনের ঘটনা- ২: জান্নাত আরা (৩৪) পেশায় স্কুল শিক্ষিকা। তিনি বাস করেন মিরপুর ১ নাম্বারে। চার সদস্যের সংসার। বিগত ১২ বছরেও তার কোন টানা পোড়া ছিল না। কিন্তু করণা মহামারীর কারণে প্রায় দেড় বৎসর অর্ধেক বেতন পেয়েছেন তিনি। জিনিসপত্রের মূল্য ঊর্ধ্বগতির ফলে তিনি প্রায় এক লক্ষ টাকা ঋণ করেছেন। তাই তিনি কম ভাড়ার বাসা খুঁজছেন। এবং মাছ-মাংস তো খেতেই পারছেন না সংসারের অন্য জিনিসপত্র কিনতে হিমশিম।
এমন লাখো পরিবার ঋণ করে কোনরকম না খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন। কেউ দুমুঠো ডাল-ভাত খেয়ে কাটিয়ে দিচ্ছেন আবার কেউ না খেয়ে কাটিয়ে দিচ্ছেন। ভোজ্য তেল এর দাম বৃদ্ধির ফলে সাধারণ মানুষ খুবই বিপাকে পড়েছেন। তাই সরকারিভাবে পদক্ষেপ নিতে হবে মূল্য নির্ধারণ করে দিতে হবে এবং ফিল্ডে মনিটরিং করতে হবে।
বর্তমান সময়ে ৫০০ টাকা নিয়ে বাজারে গেলে ছোট একটি পরিবারের দুদিনের বাজার করাও কঠিন হয়ে যাচ্ছে। ১০% মানুষের আয় বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। এই সূত্র ধরে মাথাপিছু আয়ের হিসাব করলে চলবে না। দেশে কিছু মানুষের আয় বেড়েছে এটা সর্বাধিক কিন্তু এর চেয়ে বড় কথা হলো জিনিসপত্রের দাম এর ঊর্ধ্বগতি ঠকানো কঠিন হয়ে যাচ্ছে। যার ফলে নিম্নআয়ের মানুষ জল জীবন বাঁচাতে যুদ্ধ করেও ব্যর্থ হচ্ছে।
Newsofdhaka24.com / শরিফুল ইসলাম
আপনার মতামত লিখুন: