
গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) বন্ধ ক্যাফেটেরিয়া ভবন সংলগ্ন এলাকা মাদকসেবীদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে৷ শিক্ষার্থীদের নিয়মিত খাবার সরবরাহের জন্য ক্যাফেটেরিয়াটি নির্মাণ করা হলেও প্রতিষ্ঠার আট বছর শেষেও মিলেনি তার সুরাহা।
গত বছরের করোনা কালীন ছুটি শেষে ক্লাস শুরু হওয়ার পর থেকে বহিরাগত বখাটে এবং ক্যাম্পাসের কিছুসংখ্যক মাদকসেবীরা মাদক সেবনের জন্য এই স্থানকে ধরে ব্যবহার করে আসছে । সরেজমিনে দেখা যায় যে, দিনের বেশির ভাগ সময়ে ক্যাফেটেরিয়া ভবনের সামনে দেখা যায় বিভিন্ন বয়সের মাদকসেবীদের আনাগোনা৷ তাদের বেপরোয়া মোটর সাইকেল চালানো আর উচ্চ শব্দে হৈ-হুল্লোড় ইতিমধ্যে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে।
এদিকে, ২০১৪ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া ভবন নির্মাণ করা হলেও শুরু হয়নি তার কার্যক্রম। শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট থাকায় দু’তালা এই ভবনটি দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রীদের অস্থায়ী আবাসিক হল হিসেবে ব্যবহার করা হয়। পরবর্তীতে ছাত্রী হলের নির্মাণ কাজ শেষ হলে ছাত্রীদের নতুন আবাসিক হলে স্থানান্তর করা হয়। পরে দীর্ঘ দিন ধরে তালাবদ্ধ অবস্থায় পরে থাকে ভবনটি৷ পরবর্তীতে ভবনের দ্বিতীয় তলায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির কার্যালয় করা হলেও রাতের বেলা কার্যালয়টি বন্ধ থাকায় জায়গাটি বেশ শূণ্য থাকে। এছাড়াও ভবনের সামনে রাতে পর্যাপ্ত আলোর সুবিধা না থাকায় ও আশপাশের ঘন জঙ্গলের কারণে মাদকসেবিদের মাদকদ্রব্য গ্রহণের উপযুক্ত জায়গায় পরিণত হয়েছে।
এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী জানায়, হলে যাওয়ার সময় প্রায়ই এখান থেকে মাদকাসক্ত লোকদের বের হতে দেখি৷ তারা উল্টাপাল্টা গান গাইতে গাইতে বের হয়৷ মাঝে মাঝে মেয়েদের হলের সংলগ্ন রাস্তায় গিয়েও অনেকে চিল্লাপাল্লা করে৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ স্থান মাদকসেবীদের আখড়া হওয়াটা যেমন দুঃখজনক, তেমন বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদের জন্যও অনিরাপদ।
আরেক শিক্ষার্থী বলেন, মাদকাসক্ত ব্যক্তিরা নেশার ঘোরে থাকলে কখনোই সুস্থ মস্তিষ্ক সম্পন্ন মানুষ থাকে না। বিকৃত মস্তিস্কের এই মানুষগুলো কোন একটা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটানোর আগেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।
এব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ড. রাজিউর রহমান বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক সকল কার্যক্রমে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সর্বদা সজাগ। বিষয়টি নিয়ে আমরা প্রক্টরিয়াল বডি তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত ব্যবস্থা করবো।
ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক ড. মোঃ শরাফত আলী বলেন, মাদকদ্রব্য গ্রহণের বিষয়টি আসলেই দুঃখজনক। তবে ব্যপারটি খতিয়ে দেখা দরকার।কে বা কারা এগুলো করছে, তা প্রমাণিত হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
হৃদয় সরকার, বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধি
Newsofdhaka24.com / নিজস্ব প্রতিবেদক
আপনার মতামত লিখুন: