
রিয়াজ মুস্তাফিজ,
অসংখ্য বন্ধু বান্ধব শুভাকাংখী আত্বীয় স্বজন প্রিয়জনদের বলে রেখেছেন, জুনের শেষ সপ্তাহে দেশে ফিরবেন। হৈ হুল্লোড় করবেন। প্রিয় মধুমতির তীরে মনভোলানো আড্ডা দেবেন। কোনও এক জ্যোৎস্না রাতে বৈঠা হাতে নৌকা বসে কিশোর বেলার হারানো প্রিয়তমার মুখ কল্পনায় ভেবে ভেবে দীর্ঘশ্বাস ছাড়বেন। কিছুই করা হলোনা তৌহিদুর রহমানের।
নিজেই সকল প্রিয় মানুষ, বন্ধু বান্ধব আত্বীয় স্বজনের কাছে দীর্ঘশ্বাস হয়ে রইলেন। ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের পবনবেগ গ্রামের ঐতিহ্যবাহী পরিবারের সন্তান তৌহিদুর। হাজী আব্দুল হক মোল্যার মেঝো পুত্র তৌহিদুর। গত ২০ জুন গভীর রাতে মষ্তিষ্কের রক্ত ক্ষরন জনিত কারনে সৌদী আরবেন বাসায় মৃত্যু বরন করেন তিনি। এ খবর এলাকায় পৌছাতে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে তৌহিদের পরিবার পরিজন বন্ধু ও এলাকার পরিচিত জনেরা। শোকের ছায়া নেমে আসে পবনবেগ গ্রামে। মুহুর্তেই সামাজিক মাধ্যম ছেয়ে যায় তৌহিদুরেে মৃত্যুর খবরে।
তৌহিদের ভাগ্নে বিএনপি নেতা ও ব্যবসায়ী তাহের আহমেদ শুভ ফেসবুক পোষ্টে লেখেন, কথা ছিলো এই ডিসেম্বরে আবার উমরাহ'ই গেলে -- মক্কা, জেদ্দা এবং তায়েফ শহর তোমার গাড়িতে করে ঘুরাবা! এখন কে ঘুরাবে মামা। কাতলাসুর গ্রামের রাকিবুল আলম বাপ্পি বলেন, বিশ্বাস করতে পারছি না। তৌহিদ ভাই আর আমাদের মাঝে নেই। সৌদি আরবে সকলের মায়া কাটিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেছে। জানা যায়, ২০০০ সাল থেকে তৌহিদুর মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে কর্মজীবন কাটিয়েছেন। লিবিয়া, ইতালি সহ বেশ কয়েকটি দেশে থেকে গ্রামের বাড়ি ফিরে আসেন। পরে এলাকায় কিছুদিন থেকে আবার প্রবাসের নেশায় ফিরে যান সৌদী আরবে। সেখানে ৮ বছর যাবৎ কাজ করছিলেন। পারিবারিক সুত্রে জানা যায়, তৌহিদের মরদেহের ২৫ জুলাই (শুক্রবার) গভীর রাতে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌছায়।
আজ ২৬ জুলাই বেলা ১২ টার দিকে গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গার উদ্দেশ্যে তৌহিদের মরদেহ নিয়ে রওয়ানা হয়েছেন স্বজনরা। গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান খান সাইফুল ইসলাম বলেন, প্রিয় দেশ, জন্মভূমি, প্রিয়জন ছেড়ে হাজার হাজার মাইল দূরের দেশে খেয়ে না খেয়ে হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করেন প্রবাসীরা। পরিবারের মুখে হাসি ফোঁটান তাঁরা। দেশের অর্থনীতিকে করেন শক্তিশালী। তৌহিদও একজন রেমিটেন্স যোদ্ধা। তার মৃত্যুতে আমরা শোকাহত। তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।
Newsofdhaka24.com / News
আপনার মতামত লিখুন: